শিল্প নগরীর বুকে আমরাই গ্রামে জমিদার বাড়ির শতাব্দী
প্রাচীন দোল উৎসব
|
12:06 PM (18 minutes ago) |
|
||
|
শিল্প নগরীর বুকে আমরাই গ্রামে জমিদার বাড়ির শতাব্দী
প্রাচীন দোল উৎসব
ইস্পাত নগরীর উপকন্ঠে অবস্থিত আমরাই গ্রামে জমিদার বাড়িতে দোল উৎসব পালিত হয়ে
আসছে প্রায় তিনশ বছর ধরে । এই উৎসবকে কেন্দ্র করে নানান ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য
দিয়ে এই পরিবারের মানুষজন সেকালীন রীতিনীতি মেনেই এই উৎসব পালন করে আসছেন ।দোলের
আগের দিন পালিত হয় চাঁচর বা ন্যাড়া পোড়ার অনুষ্ঠান । নিকটস্থ আমাদের নূতন পুকুর
সংলগ্ন এক জায়গায় তৈরী করা হয় একটি কুঁড়ে ঘর । মন্দির থেকে দোলায় করে নিয়ে যাওয়া
হয় লক্ষ্মীজনার্দনের বিগ্রহ । সেখানে পুজা-আর্চা ও হোম যজ্ঞের পর পোড়ান হয় সেই
কুঁড়ে ঘর । তদানীন্তন জমিদার স্বর্গীয় হরিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় এই গ্রামের
আরও অন্যান্য পরিবারের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের জন্যই প্রচলন
করেছিলেন নানান উৎসবে বিভিন্ন কুলদেবতাদের আমাদে্র মন্দিরে আনার বা এখান থেকে অন্য
মন্দিরেও যাবার । আজও এই পরিবারের সদস্যরা দোলের দিন ধুমধাম করে রায় পরিবার থেকে
তাদের কুলদেবতা শ্রী শ্রী গোপাল এবং ভট্টার্চায্য পরিবারের কুলদেবতা শ্রী শ্রী
দামোদর’এর বিগ্রহ গুলি কাঁসর ঘণ্টা বাজিয়ে শোভাযাত্রা করে নিয়ে আসেন এই
দুর্গামন্দিরে দোল উৎসব পালনের জন্য । আবির গুলালে স্নাত করে সন্ধ্যেয় আরতি
সম্পন্ন হওয়ার পর আবার সেইরুপ শোভযাত্রা সহকারে কাঁসর ঘণ্টা বাজিয়ে ভক্তিভরে
স্বস্থানে পৌঁছে দিয়ে আসা হয় তাঁদের কুলদেবতাদের । অনুরুপ ভাবে এ পরিবারের
কুলদেবতা লক্ষ্মীজনার্দন’কেও রায় পরিবার থেকে সসস্মানে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের রাশ
উৎসবে যোগদানের জন্য পূর্ণিমার ভরা চাঁদের রাতে । দোলের দিন হোম যজ্ঞ ইত্যাদী
নানান অনুষ্ঠান আজও জাঁকজমক সহকারে পালন করে আসছেন এ পরিবারের সদস্যরা ।হোম যজ্ঞ
সমাপনের পর যৎসামান্য ব্রাহ্মণ ভোজনের রীতি আজও চলে আসছে ।
এ বছর এ পরিবারের শতাব্দী প্রাচীন লক্ষীজনার্দন মন্দির চত্বরটি এবং ভোগ
মন্দিরটির সংস্কার করে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে । সামগ্রিকভাবে পরিবেশটির বিশেষ
উন্নতি হয়েছে । এ জন্য কর্মকর্তাদের সাধুবাদ জানাই । এ ছাড়াও মন্দিরটির পরিবেশ
রক্ষার্থে তথা কুকুর, বিড়াল ও গরু ছাগলের উৎপাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য বেশ
কয়েকটি লোহার গেটও বসান হয়েছে ।
এই দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে এদিন নানান পুজা আর্চা ছাড়াও সন্ধ্যায়
দুর্গামন্দির প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয় কীর্তনের আসর । বহু স্বনামধন্য শিল্পীদের
আমন্ত্রণ জানানো হয় এই অনুষ্ঠানে । অসংখ্য মানুষের সমাগমে এই আসর এক অন্য মাত্রা
পায় দোল পূর্ণিমার দিন চাঁদের হাসির বাঁধ ভাঙ্গা জোৎস্নায় । কীর্তন শেষে শুরু হয়
লুচি পোলাও ও মিষ্টান্ন সহযোগে প্রসাদ বিতরনের পালা । সামগ্রিক ভাবে এই দোল উৎসব
এই শিল্পনগরীর বুকে এক অন্য মাত্রা পেয়ে আসছে সুপ্রাচীন কাল থেকে ।
No comments:
Post a Comment