করোনার তাণ্ডব ও লকডাউন
- কাঞ্চন কুমার চট্টোপাধ্যায়
Masculine
Ignorance -
পুরুষালি অনভিঙতা বলে একটা কথা সে সময় প্রায়ই
শোনা যেত । এই সমাজে কিছু পুরুষ ছিল বা এখনও
আছেন যাঁরা সংসারের সামান্য কাজও করতে পারেন না বা করেন না বা শিখে নেবার চেষ্টাও করেন
না । আর সেই সব মানুষের কাছে এটা ছিল এক গর্বের ব্যাপার ।আর এই গর্ব নিয়ে এই সমাজে বহু স্ত্রীরাও বুক ফুলিয়ে সমাজের নানান জায়গায় বা
নানান জনের কাছে বলেও থাকতেন যে আমার উনি
বা আমার কর্তা বা নিদেন আমার ‘ও’ কিচ্ছুটি পারে না । ( আজকের দম্পতিরা অবশ্য দুজন দুজনকে
নাম ধরেই ডাকে )।কেউ কেউ আবার বা বলতেন “উনি তো
রান্নাঘরটাই কোন দিকে তাই জানেন না বা চায়ে নুন দেয় না চিনি দেয় তাও জানেন না
”।অনেক মা’রাও এই গর্বে গ্ররবিত হয়ে বলে থাকতেন “আমার ছেলে বা মেয়েরা কোন দিন এক গ্লাস
জল গড়িয়েও খায় নি”।বহু সেলিব্রিটিরাও ওপেন প্লাটফর্মে অকপটে স্বীকার করে নিচ্ছেন তাঁদের
সংসারের কাজের এই অনভিঙতার কথা, এবং বেশ গর্বের সাথেই ।
কিন্তু
আজ আর সে দিন নেই । করোনা ভাইরাসের নির্দয়তার দাপটে সারা বিশ্বব্যপী লকডাউনের দৌলতে
বহু মানুষের সেই ঠুনকো গর্ব কিন্তু ভেঙে চুরমার হয়ে গেল । কাজের লোক, রান্নার মাসি
বা দিদি বলে যে সব ‘আপঞ্জনেরা’ আমাদের এই
অনুপরিবারে এতদিন সব দায়িত্ব নিয়ে আমাদের ঠাট বাট বজায় রাখতেন তাদের অনুপস্থিতিতে আমরা
সবাই যেন কেমন সাবলম্বী হয়ে পড়লাম । এই কয়মাসে আমরা যেন আমাদেরকে নতুন ভাবে চিনতে পারলাম
। এতদিন বহু পুরুষেরাই হয়ত ভাবতেন এ সংসারে অর্থ উপার্জন আর সংসারের রসদ জোগানো ছাড়া
হয়ত তাদের আর কোন দায়িত্বই নেই, বাকি সব দায়িত্বই তাদের স্ত্রীদের উপর বা মেয়েদের উপরই
বর্তায় । কিন্তু লকডাউন সেই মিথ ভেঙে চুরমার করে দিয়ে গেল । বুঝিয়ে দিয়ে গেল সংসার
কারো একার নয় – আমাদের সবার । সব দায়িত্ব স্বামী, স্ত্রী সন্তান সন্ততিদের মধ্যে সমান
ভাগে ভাগ করে নেওয়ার নামই হচ্ছে সুখী পরিবার । এই শিক্ষা আমাদের এতদিন কেউ বা কোন পরিস্থিতিই
দিতে পারে নি, কিন্তু এই লকডাউন্ সেই শিক্ষা দিয়ে আমাদের মানুষ করে দিয়ে গেল । আমারা
আমাদের নিজ নিজ গুণে ‘মেড ফর ইচ আদার’ হয়ে
উঠতে অন্ততঃ চেষ্টা করলাম । এ সবই কিন্তু লকডাউনের সুফল ।ঘরে থাকা স্ত্রী অর্থাৎ গৃহবধুদের
এতদিন সমাজ কর্মহীণ বলেই হয়ত জেনে এসেছে । পাশাপাশি কাপড় কাচা, বাসন মাজা, রান্না করা
এই কাজগুলো সমাজে নারীর কাজ বলেই যেন স্বীকৃ্ত ছিল ।পুরুষেরা এই সব পরিষেবা তাদের হাতের
কাছে পেয়ে এসেছে যুগ যুগ ধরে এবং কখনও এই পরিষেবার আড়ালে থাকা খাটুনিকে বুঝতেও চেষ্টা
করেন নি । কিন্তু এই লকডাউন এই বিভেদ ভেঙে দিয়ে একাকার করে দিয়ে গেছে ।সংসারে সবাই
সব কাজে হাত লাগাতে শিখেছে, এটাই কি কম পাওয়া ! শুধু কি তাই। সংসারের কাজ কর্ম করা
ছাড়াও কত সুফল যে আমরা পেয়েছি এই লকডাউন পিরিয়ডে তা আর বলে বোঝানো যাবে না । যদিও কর্মহারাদের
সংখ্যা কিছু কম নয়, তবূও তাদের হাজার দুঃখ দুর্দশার মাঝেও তারা তাদের ছোট্ট ছেলেমেয়েদের
নিয়ে সবাই মিলে একসাথে থাকতে পেরেছে । কত অসহায় ছেলে মেয়ে তাদের শৈশব, কৈশোর হারিয়েছে
সংসারে একা একা থেকে তাদের বাবা মা রোজগারের তাগিদে বেরিয়ে পড়ার জন্য ।এমনও দেখা গেছে
কত বাবা মা কোন কাক ভোরে বেরিয়ে বাড়ি ফিরত সেই নিশুতি রাতে যখন তাদের ছোট ছোট ছেলে
মেয়েরা ঘুমিয়েই পড়ত । কিন্তু এই লকডাউনে তারা তাদের বাবা মা’এর সংগে একসাথে থাকতে পেরে
একসাথে ঘুমোতে পেরে যেন তারা তাদের জীবনটা একটু অন্য স্বাদে কাটাতে পেরে প্রাণ ফিরে
পেয়েছে ।
অন্যদিকে সংসারে একটু সাহায্যের
জন্য কত ছেলে মেয়ে টিউশন শুরু করেছে বা আরও কত কি কাজ করে বাবা ময়ের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে
অর্থ উপার্জন করে সংসার চালানোর চেষ্টা করেছে । অসহায় অবস্থায় উপায় বিহীন হয়ে কত মানুষ
তাদের জীবিকা বদলে ফেলেছেন তার আর ইয়ত্বা নেই । যারা হয়ত ভাবতেন তাঁর দ্বারা আর অন্য
কোন কাজই করা সম্ভব নয়, তাঁরাও সে সব ভুলে জীবন যুদ্ধে না হেরে গিয়ে নানান কাজে নিজেদেরকে
নিযুক্ত করে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করতে শিখেছেন বা তাদের প্রতিভাকে বিকশিত করার চেষ্টা
করে তাদের সংসারটাকে ধরে রেখেছেন, এটাও কিছু কম পাওয়া নয় ।
এখানেই
শেষ নয়, কত মানুষ যাঁরা এক কালে সংস্কৃতির ধারক বাহক ছিলেন, হয়ত বা সংসারের চাপে সে
সব প্রতিভার কথা ভুলেই গিয়েছিলেন, তাঁরাও এই লকডাউনের অফুরন্ত সময়ে আবার সে সব ঝালিয়ে নেবার সু্যোগ পেয়ে নিজেদেরকে ধন্য মনে করতে পেরেছেন
। কত স্বামী স্ত্রী হয়ত সময় পেয়ে আবার যুগলে অভ্যেস করে নিয়েছে্ন রবিঠাকুরের ‘বিদায়
অভিশাপ’ বা ‘কর্ণকুন্তীসংবাদ’ । কত সুগৃহীনিরা যাঁরা এককালে এই আবৃত্তি চর্চার মধ্যে নিজেদেরকে ডুবিয়ে রাখতেন তাঁরাও সময় পেয়ে
হয়ত ঝালিয়ে নিলেন তাঁদের ‘সাধারন মেয়ে’
বা ‘মুক্তি’র মত কবিতাগুলি । এতদিন স্বামীরা
কাজের চাপে হয়ত স্ত্রীদের সুমধুর কন্ঠে এই সব আবৃত্তি ভাল করে শুনতে সময়ই পাননি, তাঁরাও দুদণ্ড একসাথে বসে সে সব শুনতে পেরেছেন । কত জোৎস্নায় স্বামী স্ত্রী হয়ত মধ্য বয়সে বা জীবন সায়াহ্নে নিরালা
নিভৃতে একসাথে বসে বা ছাতে গিয়ে আকাশ ভরা সূর্য তারার মাঝে মনে মনে হয়ত বা ভেবেছেন
‘এমনি করেই যায় যদি দিন যাক না’ । কিংবা
এই সু্যোগে একবার স্মৃতি রোমন্থণ করার চেষ্টা করেছেন কে প্রথম কাছে এসেছিলেন বা কেই বা প্রথম ভালবেসেছিলেন । যে প্রশ্নের জবাব হ্য়ত এতকাল থেমেছিল সংসারের নানান চাপে বা একান্তই
সময়ের অভাবে ।কেউ কেউ বা আবার নিজের নিজের পছন্দসই গল্প, উপন্যাস বা আরও অন্য কিছু
বই যেগুলি হয়ত এতদিন আলমারিতেই শোভা বৃদ্ধি করেছিল, সেগুলি ইতিমধ্যে আরেকবার পড়ে ফেলেছেন
।
চাকুরিরত
কত দম্পতি এই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ ’এর সুবিধায়
কাজের ফাঁকে ফাঁকে তাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে জীবনটা একটু অন্য রকম ভাবে কাটাতে
অভ্যস্ত হয়েছেন ।একান্ত্ ভাবে নিজের মত করে ঘর গোছাতে পেরেছেন । পড়ন্ত বিকেলে বাড়ির
বা ফ্ল্যাটের নীচে সবুজ গালিচার মত ঘাসে তাদের
ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে বা শিশুদের দলবল নিয়ে কত রকমের খেলা খেলতে পেরেছেন বা তাদের
নিয়ে পার্কে বসে দোলনায় দোল খেতে খেতে সময় অতিবাহিত করেছে্ন ।নানা রকম রান্না করেছেন
। এই ইঁদুর দৌড় প্রতিযোগিতার দিনে সাত সকালে
কোন কিছু মুখে দিয়ে দুজনকেই বেরিয়ে পড়তে হয়েছে এতদিন তাদের ছোট বাচ্চাকে আয়ার
কাছে বা অন্য কারো কাছে রেখে ।তারা নিশ্চই মনে মনে ভেবেছেন এই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ ’এর সুবিধা ছাড়া এইভাবে
সময় কাটানো হয়ত তাদের এ জীবনে আর হতই না । উইক এন্ড বা ছূটির দিন ছাড়া সবাই একসাথে বসে প্রাতরাশ
বা মধ্যাহ্ন ভোজন কতদিন যে তারা খায়নি তা প্রায় ভুলতেই বসেছিলেন, কিন্তু এই
লকডাউন সেই সাধও পূর্ণ করে দিল তাদের সবার ।
এই
লকডাউনে কত মানুষ চিনতে পারলেন কেই বা তাদের সত্যিকারের বন্ধু বা স্বজন । কত অসহায়
অশিতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধা যাঁদের সন্তান সন্ততি দূর দেশে বা বিদেশে থাকার জন্য তাদের ছাড়াই
থাকতে বাধ্য হন কিংবা সেই দুজনের একজন আরেকজনকে ইতিমধ্যে ছেড়ে চলে গিয়েছেন এবং এই পরিস্থিতিতে
অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে একাই থাকতে বাধ্য হন তাঁরাও চিনতে পারলেন তাঁদের পাড়ার বা
ক্লাবের সেই সব ছেলে ছোকরাদের যারা সেই অচিন্ত কুমার সেনগুপ্তের ‘ছন্নছাড়া’ কবিতার ছেলেদের মত এক অসহায় বেওয়ারিশ
ভিকি্রির রক্ত মাংসে দলা পাকানো দেহ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাণ ফিরে পাওয়ার আনন্দে ঝংকৃত হয়ে ওঠে - এমনিতে যে সব ছেলেদের হয়ত অনেকেই একটু অন্য রকম ভাবে দেখতেন এতদিন ।এই
অসহায় পরিস্থিতিতে তাদের উপর নির্ভর করেই সেই সব অসহায় মানুষদের দিনপাত করতে হয়েছে
। সেই দুর্দিনে এই ছেলেরাই এ সব অসহায় মানুষদের জুগিয়েছে খাবার, এনে দিয়েছে তাদের জীবনদায়ী ওষুধ কিংবা নিয়ে গেছে কোন হাসপাতালে সমস্ত
ভয়, ভীতি ত্যাগ করে । কত মানুষ তাদের এই দুঃখের দিনে চিনতে পারলেন কোনটি কুম্ভিরাশ্রু
বা কোনটি ল্যাক্রিম্যাল নামক অশ্রু গ্রন্থি থেকে আসা চোখের জল ।
শুধু
আমরাই নয় আমাদের গৃহবন্দি দশায় প্রকৃতিও যেন নুতন ভাবে প্রাণ খুঁযে পেয়েছে; স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে । কত জীবজগৎ নতুন করে
নির্ভয়ে নির্মল বাতাসে বাঁচতে শিখেছে ।ভোরের কত নাম না জানা পাখির ডাক যে আমরা এতদিন
শুনিইনি বা ভুলতেই বসেছিলাম সে সব আবার শুনতে পেয়ে আমাদের মন ও প্রাণ যেন শান্ত হয়ে
উঠেছে ।
এই
লকডাউনে আমরা দৈনন্দিন জীবনে আরও কত কি যে
শিখলাম তার কোন ইয়ত্তাই নেই । এতদিন আমরা বাইরে
কোথাও থেকে ঘুরে এসে বিশেষ করে খাবার আগে কোন রকমে হাত ধুয়ে খাবার টেবিলে বসে পড়তাম
।এখন কিন্তু একেবারেই আমরা পাল্টে গেছি । খাবার আগে ভাল করে নিয়ম মত অনেকক্ষণ ধরে সাবান
দিয়ে হাত
পা ধুয়ে তারপর খেতে বসছি ।এমনিতেও দিনে
অনেকবার করে সাবান দিয়ে হাত ধুচ্ছি আমরা ।বারে
বারে স্যানিটাইজার ব্যবহার করছি । একান্ত প্রয়োজন
ছাড়া বাইরে যাচ্ছি না বা গেলেও পকেটে করে স্যানিটাইজার নিয়ে যাচ্ছি এবং তা বার বার
ব্যবহারও করছি । মাস্ক ব্যবহার করতে শিখলাম
। সুস্থ থাকার জন্য আরও অনেক পদক্ষেপ নিতে শিখলাম - নিস্প্রয়োজনে ভিড়ে না বেরোতে শিখলাম
। হাট বাজারে একে অপরের সাথে দুরত্ব বজায় রেখে চলতে শিখলাম । হাঁচি কাশি এলে হাত না দিয়ে কনুই ব্যবহার করতে শিখলাম । সারাদিনে
যাঁদের একবারও ঠেকে না বসে পিএনপিসি না করলে বা তাস না পেটালে তাঁদের ভাতই হজম হত না,
তাঁরাও ঘরে বসে নানান কাজে ব্যস্ত থেকে স্ত্রী
পুত্র কন্যাদের সাথে গল্প গুজব করে বা নিছক ঘরোয়া আড্ডা দিয়ে বা আরও অন্য কোন ভাল কাজের মধ্য দিয়ে সময় কাটাতে শিখলেন । আমরা ভিড় এড়িয়ে সোস্যাল ডিসট্যান্সও মেনটেন করতে জানলাম । হোটেল
রেস্টুরেন্ট’এ ফাষ্ট ফুড বা জাঙ্ক ফুড খাওয়া দাওয়া প্রায় ছেড়েই দিতে অভ্যস্ত হলাম । সাহেবি কায়দায় হ্যান্ড শেক ছেড়ে নমষ্কার করতে শুরু
করলাম ।“তোমার নির্দয়তার ভিত্তিতে উঠেছে সভ্যতার
জয়তোরণ, ত্রুটি ঘটলে তার পূর্ণ মূল্য শোধ হয়
বিনাশে ” – রবি ঠাকুরের এই কথা যে কত সত্য তা আজ আমরা হাড়ে হাড়ে বুঝতেও পারলাম
।
আমরা টেলিমেডিসিনে ভিডিয়ো কল ও
কনফারেন্সের মাধ্যমে বড় বড় ডাক্তারের মতামত বা উপদেশ নিতে জানলাম । কত অল্পবয়সী ছাত্র-ছাত্রীরাও অনলাইনে
ক্লাস করতে শিখল, পিডিএফ ফরম্যাটে সে সব সঠিক জায়গায় পাঠাতে শিখল যে সব পদ্ধতি এতদিন
সীমাবদ্ধ ছিল শুধুমাত্র সিনিয়র ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে তাদের কিছু প্রফেশনাল পাঠ্যক্রমের জন্য ।
তবে শুধু শিক্ষা বা প্রাপ্তিই
নয়, আমরা হারালামও অনেক কিছু ।কত ছেলে মেয়ে, কত নারী পুরুষ নির্বিশেষে কর্মহারা হয়ে
গেলেন এই লকডাউনে তার সঠিক হিসাব কেই বা রাখে ? সারা পৃথিবীতে কত মানুষ কত প্রতিভাবান ব্যাক্তিত্বই
না অকালেই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন এই করোনার উপদ্রবে তারও সঠিক তথ্য পাওয়া হয়ত কোনদিনই
যাবে না । তাঁরা আরও কিছুদিন এই পৃথিবীতে থাকলে আমরা না জানি আরও কত ভাবে সমৃদ্ধ হতে
পারতাম ! সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ এভাবে চলে যাওয়ায় কত অপূরণীয় ক্ষতিই না হল তার
হিসেব কে’ই বা দেবে আজ । তাঁদের আত্মার প্রতি রইল আমার যথাযথ সম্মান ও বিনম্র শ্রদ্ধা
।
করোনা
মুক্ত নতুন ভোরের প্রতীক্ষায় শেষ করলাম ।
No comments:
Post a Comment